Posts

অনুকাব্য সমগ্র (বাংলা/ইংরেজি)

১৭ আগষ্ট, ২০০৯ সারা রাতভর হেঁটে চলেছি মহাসড়ক মাঝে গাড়ির আলোয় আঁধার কিছুটা আলোকিত খুঁজে চলেছি প্রথম আলোক নিষ্কম্প আঁধারে ভোরের সূর্যালোক দেখা দেবে তো? ১৮ নভেম্বর, ২০০৯ হিম হিম ঠান্ডায় আচমকা নিশ্চুপ নিরবতা সারাবেলা কাকে যেন খুঁজি তবু কাকে যেন মনে পড়ে যায় মেঘগুলো ভেজা তুলো নীরবতা শুভ্রতা ঠান্ডায়... ১৯ আগষ্ট, ২০১০ হাত দুটো ছড়িয়ে দিয়ে মেঘবালিকাকে বলি, এসো কাছে তোমার ছাইরঙ কষ্টগুলো আপন বলে দাও আমাকে, অশ্রুসিক্ত কালো ভেজা চুলে বরণ করে নেব যখন তুমি চাও আমাকে শুধু অল্প একটু ভালোবাসা দিয়ে যাও... ২৪ আগষ্ট, ২০১০ নিকটো তাচ্ছ্বিল্য ভব দুরত্বে অজাননীয়, পরন্তু রংধনু অনুভূতি সাধনে অনুমেয়! উপরন্তু সখি অগ্নুৎপাতে জ্বলন্ত, ধুসারিত ছাই তবু কতটাই জ্বলমেয়??? ২৬ আগষ্ট, ২০১০ আমার আঁধার ফ্লুরোসেন্টের মিথ্যে আলোয় রাঙ্গানো, আমার স্বপ্ন বৃষ্টির সাথে মিশে যায়... আমার গল্প গদ্য কবিতা বিনা-ছন্দ নিনাদ বজ্র, আমার নিঃশ্বাস একা একা শুধু সয়ে যায়... ২৯ আগষ্ট, ২০১০ শত ব্যস্ততার মাঝে হঠাৎ ফোনের শব্দে চমকে উঠি! হঠাৎ করে মনে পড়ে পুরনো কোনও ফোনের কথা... নাম্বারটা দেখে...

স্ফটিক

ছবি তোলার এক গ্লোব পাওয়া যায়, আজব জিনিস! আটাশ এম এম মায়াবী আলোয় উলটো করে বাড়িয়ে ধরে জগতটাকে! স্বচ্ছ জগত আবছা আসল - নকল আলোই দেখতে ভাল! স্বচ্ছ জগত আরও দেখা যায়, আরও মায়াময়! জানো তো তুমি? কখনও কারও চোখের ভেতরে তাকিয়ে দেখেছ? স্ফটিকের স্বচ্ছ আলো - খুঁজে নিয়েছ? এই জগতের পুরোটা আসল, অনেক গভীরে, কারও শুধু সবুজ, কারও শুধু রঙ, আর কারও শুধু আবাস্তব এক বাস্তবতা! চিনে নিয়েছ? আটাশ এম এম লাগবে না তো! লাগবে না কোনও ছবির গোলক - স্ফটিক! এক পা এগিয়ে চোখের গভীরে তাকাও তুমি? আমাকেই তুমি খুঁজে পাবে নাকি আকস্মিক?!

অ-শিরোনামীয়

তুমি আমায় দিয়েছিলে ফোন শেষ বিকেলের পরে, চাঁদটা তখন আসছে সবে সূর্যটাকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে! হাঁটিছি আমি মাঝ রাস্তায়, বাজছে আমার ফোন- মন বলছে, ধরতে বারণ হাঁটার মাঝে ফোন। শুনতে পাচ্ছি ঐ রিংটোন- চেনা সেই প্রিয় মুখের ছবি জানি আমি উঠে আছে পর্দায়, ফোনটা ধরতে বারণ! হাঁটবো আমি আজ সারাদিন- সূর্যটাতো বিদায় নিল, চাঁদটা থাকবে বাকি সারা রাত; চাঁদের আলোয় হেঁটে সারা রাত শুদ্ধ হয়ে তবে আমি পবিত্রতায় সিক্ত হয়ে তোমার হাতে হাত বাড়াব! উৎসর্গঃ আয়েশা সিদ্দিকা হুমায়রা - আমার এই মিষ্টি বোনটা সেদিন আমাকে বিকেলে ফোন দিল। তখন আমি সংসদ ভবনের সামনে দিয়ে হাঁটাহাঁটি করছি। কি সুন্দর ট্রানজিশন চলতে তখন - এ বেলার সাথে ও বেলার! মাঝখানে আমি আটকা পড়ে গেলাম! আর ঠিক তখুনি শেষের লাইন ক'টা মাথায় যন্ত্রণা পাকাতে শুরু করল! ফোনটা ধরলাম না। আদরের ছোট বোনদের ফোন সাথে সাথে ধরতে হয় না। তাহলে নাকি তাদের টান কমে যায়! তার চেয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে টকটকে লাল সূর্যটার দিকে তাকিয়ে মাথার জট-টা ছাড়ান শুরু করলাম। এই কবিতাটা তোর জন্যে, হুমায়রা!   পুনশ্চঃ আমি সাধারনত এ ধরনের কবিতা লিখি না। হঠাৎ করে কেন যেন লিখতে ইচ্ছে হল। একধরনের এক্সপের...

আমার কাছে চাই

খসে খসে পড়া নকল প্লাষ্টার, ফাঁপা ফাঁপা ইট-কাঠের বাইরে নতুন নতুন রঙের বাহার সব মিথ্যে। নতুন নতুন রঙের প্লাষ্টার খসে পড়ে যায়, বেরিয়ে আসে প্রাচীন-কঠিন-সত্য নোংরা- শতাব্দীর পরে সহস্রাব্দ দেখে আসা ধূসর মলিন মানচিত্র, বেরিয়ে আসে! ঘুনে ঘুনে ধরা কাঠের বাইরে সাজান নকল নকল পঁচে পঁচে যাওয়া নকশা! নকশা নকশা সবকিছুতে মিথ্যে মিথ্যে প্রলেপ- সবকিছুতে যেন মৃত্যুর বসবাস! ভেঙে চুরে দেব ঘুনে ধরা কাঠ, ধ্বসিয়ে দেব নকল সব প্লাষ্টার আর মৃত্যুর যত হাতছানি আজ জীবন থেকে। আগুন আগুন! আগুনে পুড়িয়ে ছাড়-খার করে জ্বলিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করব নিজের যত কাপুরুষতা, নিজের যত অসহায়ত্ব পঁচে গলে যাওয়া সভ্যতাতে একাকী, আমি- আমার কাছে মুক্তি চাই! উৎসর্গঃ জন লেনন (John Lennon), তার অসম্ভব সুন্দর ইমাজিন (Imagine) গানটার জন্যে। ♫ You may call me a dreamer, but I am not the only one ♫ - John Lennon (Imagine)

আমার আকাশে ঘুড়ি

আসলেই তো! যে আকাশে হাজার হাজার ঘুড়ি উড়ে যায়, যে আকাশে কাগুজে যত স্বপ্ন পাখিরা রঙ-বেরঙ এর ডানা নাচিয়ে ঠুন্‌কো কাঠিতে ভরটা দিয়ে অনেক অনেক অনেক উঁচুতে অনিশ্চিতে ঘুরে বেড়ায়... সে আকাশ তো আমার চেয়ে বড়ই হবে! আমার আকাশটা তার থেকে তো ছোটই হবে! আমার আকাশে তো ঘুড়ি ওড়েনা, তারা দেখায়না ঠুনকো কাঠির ঠুকনো স্বপ্ন- দেখায়না তো রঙ-বেরঙ এর অনিশ্চিতের কবিতা! তারা শুধু চায় রঙ-হীন এই জগতটাকে বৃষ্টি ভেজা পেঁজা আকাশের সাতটা রঙে চিরন্তনের অমিয় ধারায় রাঙ্গিয়ে দিতে! বৃষ্টি দেখার সময় কোথায়? সবাই তো চায় কৃত্রিম কিছু চিন্তা ভাবনা কৃত্রিম কিছু আবেগ-বানানো মূহুর্ত, ঘুড়িতে ভরা! রংধনুকের সাতটি রঙের সময় কোথায়? ঘুড়িতে মাখানো কৃত্রিম রঙ, যথেষ্ট না? ঘুড়ি, তুমি যে আকাশে ওড়, সে আকাশ তো আমার চেয়ে হবেই বড়!

প্রজাপতিটা

ছোট্ট একটা প্রজাপতি- অতি পরিচিত লাল-লাল-নীল-কাল্‌চে ডানায় মায়া ছড়িয়ে আমার হাতের ঘূণে ধরা সেই দাগ মুছে যাওয়া রেখার মাঝে, সাঁঝ বিকেলের লাল্‌চে আলোয় হঠাৎ করেই চুপটি করে মায়া মায়া চোখে আমার চোখে চোখটা রেখে সেই রেখাতে একটু থামে! ছোট্ট একটা প্রজাপতি- তাকে আলতো করে হাতটা তুলে আমার চোখের ভাষায় তাকে বুঝতে গিয়ে সাঁঝ বিকেলের লাল্‌চে আলোয় হঠাৎ করে ঠাঁস-বুনোটে হারিয়ে যাওয়া অন্য কত লাল্‌চে আলোয় অভিমানে ভরা লাল-লাল-নীল-কাল্‌চে ক্ষত, সেই অভিমান জড়িয়ে ধরে! ছোট্ট একটা প্রজাপতি- তাকে সোনালী আলোয় উড়িয়ে দিয়ে জানালা দিয়ে ডানা মেলে মেলে উড়ে যাওয়া সেই কত চেনা সেই একলা পাখি, হঠাৎ করেই খেয়াল হতে ফিরে চেয়ে দেখি এই আমাকে- সেই প্রজাপতিটাকে বলা হয়নি, তার লাল-লাল-নীল-কাল্‌চেটা আমি কত ভালবাসি...! উৎসর্গঃ আমার অনেকগুলো ছোট ছোট বোন!!! তার মাঝে কয়েকজন একেবারে আমার আত্মার সাথে মিশে আছে একাকার হয়ে। সত্যি কথা বলতে কি, আমার অস্তিত্বের একটা অংশ তারা। আজকে (১৪ই ফেব্রুয়ারী, ২০১২ - ভালোবাসা দিবস) তাদের মাঝে একজন আমাকে একটা কবিতা পাঠালো এস.এম.এস করে। আমারই লিখা কবিতা। প্র...

শহরের সব লাল্‌চে কথা

তোমার আকাশে সূর্যটা যদি- হঠাৎ করেই লাল্‌চে হয়ে নিচ্ছে বিদায়, ভাবছো তুমি শেষ বিকেল, হয়তোবা কোনও খোলা জানালায়; শহর জুড়ে সুপ্রাচীন সেই ব্যস্ততা- তবু তোমার চোখে লাল্‌চে আলোয়, বড় বড় সব দালানকোঠার ঘূণে ধরানো বাস্তবতাকে টপকে দিয়ে অজানা ভাষায়- জানতে চাওয়া নিঃশব্দের কঠিন প্রশ্ন! ধূর! বোকা মেয়ে! জান না তুমি? সূর্যটা আজ লাল্‌চে বলেই একটু পরে চাঁদটা আসে? উৎসর্গঃ আমার একটা ছোট্ট লক্ষ্মী বোন আছে। সে প্রশ্ন করতে খুব পছন্দ করে! আজ হঠাৎ করে তার তোলা একটা ছবি দেখে লাইনগুলো মাথায় চলে আসলো। অনেকদিন লিখা হয়না। তাই অফিসের কাজ ফাঁকি দিয়ে বসে গেলাম...  ও, ভালো কথা! আমার বোনটার নাম শাকিলা মোহসীন।  পুনশ্চঃ ছবিটার সর্বস্বত্ব আমার বোনটার। যেখান থেকে দেখেছিঃ https://www.facebook.com/photo.php?fbid=371512256196160&set=a.358251500855569.100789.100000121662938&type=3

বাড়ি ফেরা

এলোমেলো পথে কখন যেন গহীন রাতে এসে উঠি সমান্তরাল এগিয়ে চলা রেলপথে। নিঃশব্দের মানুষ বেশে খুঁজে বেড়ানো নির্জন কোনও অন্ধকার নিকষ কালো আত্মাতে! কিন্তু হঠাৎ চমকে উঠি- গহীন রাতে ছোট ছোট এত কলকাকলী? খুঁজতে দেখি অজস্র মুখ, যাচ্ছে বাড়ি! হারিয়ে যাই অনেক দূরে, হারিয়ে যাওয়া কোনও অতীতে, এমনি করে আমিও কখনো ঝলমলে কোনও খোকার বেশে ঈদের ছুটিতে সবাই মিলে যাচ্ছি বাড়ি - অনেক দূরে, অনেক দূরে! হারিয়ে গেল কোথায় সেদিন- শুধু সুপ্রাচীন ব্যস্ততা মাঝে হারিয়ে যাওয়া- ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়া... উৎসর্গঃ ছোটবোন সাবান্নুমা সুলতানা প্রীতিঃ আইডিয়াটা তার।

হতচ্ছাড়া শব্দগুলো

হতচ্ছাড়া শব্দগুলো ছাড়েনা পিছু আমার! আমি চাইনা কোনও পিছুটান, চাইনা কোনও লোহার খাঁচায় বন্দীবেশে আটকে পড়া মুক্ত পাখি, চাইনা কেউ মিষ্টি হেসে আল্‌তো লাজুক চাউনী চোখে বলুক- তোমায় ভালোবাসি! তবু হতচ্ছাড়া শব্দগুলো ছাড়েনা পিছু আমার! বারে বারে ধেয়ে এসে বেঁধে নিতে চায় বন্দীবেশে, কোনও অজানা অবুঝ অর্থ, কোনও সহসা না পাওয়া শব্দ, সেই হতচ্ছাড়া শব্দগুলো ডানা ঝাপ্‌টিয়ে মুক্ত হয়ে বলতে চায়- তোমায় ভালোবাসি! উৎসর্গঃ রাহাত হোসাইন। আমার বস্‌। যার সামনে বসে এটা লিখা!

নস্টালজিয়া

বৃষ্টিস্নাত কোনও পড়ন্ত বিকেলে হয়তো- চিরচেনা কোনও দরজা খোলা রেখে, পিছুটান কিছু পিছনে ফেলে এসে, তুচ্ছ করে বাড়িয়ে দেয়া প্রিয় কারও হাত, সাথে বহুদিন পথের সঙ্গী বাটা, স্বপ্নের খোঁজে পা বাড়িয়েছি অনন্ত... আসবোনা ফিরে আর কোনওদিন হয়তো- দেখা হবেনা প্রিয় কিছু মুখ, এতকাল ধরে পার করে আসা কিছু কিছু সুখ, কান্না-হাসির রোমাঞ্চ ভরা মুহূর্তে, ঝাপসা চোখে ফেলে আসা কিছু সত্যে, অজানা পথে হেঁটে চলবো শুধুই অবিরত... দেখা তবু হবে অনেক পরে হয়তো- থাকবেনা কেউ চিনিয়ে হয়তো নেবার, শহর জুড়ে শুধু সুপ্রাচীন ব্যস্ততা, ধ্বসে যাওয়া কিছু সত্তা বন্দী, ঘটে যাওয়া কত গল্প-কাহিনী, তবু আমি আছি তোমাদের সাথে চিরন্ত... উৎসর্গঃ আমার পুরো পরিবার।

আমার তুমি যেমন তুমি

গরমের প্রবল তৃষ্ণায় আমি ভীত নই, আছে তোমার মিষ্টি ঠোঁটের বিলিয়ে দেয়া প্রাণ; বর্ষার প্রবল বর্ষণে আমি ক্লান্ত নই, আছে তোমার ক্লান্তি ভোলানো মুখচ্ছবি; হাড়কাপানো শীতে আমি কম্পিত নই, আছে তোমার উষ্ণ হাতের কোমল ছোঁয়া... তাই শরৎ আমায় ডাকে, বলে তোমায় নিয়ে হারিয়ে যেতে দূর অজানায়; তাই হেমন্ত আমায় ডাকে, বলে তোমার গভীর ডাগর চোখের মাঝে হারিয়ে যেতে; তাই বসন্ত আমায় ডাকে, বলে তোমার হাতটা ধরে উড়াল দিতে নীল আকাশে... তাইতো আমার নেইতো কোনও জড়তা, তোমার ছোঁয়ায় পবিত্র যে আমি; তাই আমি আজ আমায় ডাকি, বলি তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখি লাল লাল নীল... উৎসর্গঃ নুসরাত নুর আফরোজ সোমা, আমার এক্স-ক্লাসমেট, যে চার বছর পেড়িয়ে অবশেষে বসন্তের সন্ধান পেলো...